জমিদার শব্দটি এসেছে ফারসি শব্দ ‘জমিন’ থেকে, যার অর্থ জমি এবং ‘দাস্তান’ অর্থাৎ মালিকানা। মধ্যযুগের অভিজাত শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত ছিল জমিদারেরা। মোঘল আমলে জমিদাররা ছিল প্রকৃত খাজনা গ্রাহক হিসেবে। জমিদারদের ব্যক্তিগত জীবন ধারা ছিল বেশ জাঁকজমকপূর্ণ এবং বিলাসিতায় পরিপূর্ণ।
তাদের বিলাসী জীবনের চাকচিক্যকে ধরে রাখার জন্য এবং আরও সম্প্রসারণ করার জন্য তখন মিহি সুতিবস্ত্র, রেশম বস্ত্র, বিভিন্ন পণ্য, রত্ন অলঙ্কার, কারুকার্য খচিত তরবারী ও অস্ত্র তৈরি ব্যাপক উৎসাহ পায়। জমিদারেরা তাদের দরবারকে নবাবদের অনুকরণে অথবা নিজস্ব পছন্দের ডিজাইনে রাজকীয়ভাবে তৈরি করতেন। জমিদারদের শাসনামল খুব বেশিদিন টিকে না থাকলেও পরবর্তীতে ঔপনিবেশিক যুগের কৃষক আন্দোলন হয়, তখন ধীরে ধীরে জমিদারি প্রথা বিলুপ্ত হতে থাকে।
পূর্ব বাংলায় ১৯৫০ সালে, ভারতে ১৯৫১ সালে এবং পশ্চিম পাকিস্তানে ১৯৬০ সালে জমিদারি প্রথার বিলুপ্তি ঘটে। জমিদারি প্রথার বিলুপ্তি ঘটলেও তাদের ঐতিহ্যবাহী স্থাপত্য শিল্প এবং বিভিন্ন স্থাপনা এখনও টিকে আছে।
বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাড়িয়ে রয়েছে। এর সাথে এক-একটা জমিদার বাড়ির আছে এক একরকম ইতিহাস।
তখনকার সময় জমিদাররা ছিলেন অনেক ধন-সম্পদের মালিক। তাই তারা তাদের বাড়িগুলো বানাতেন দালানের মধ্যে অপূর্ব কারুকাজ বিভিন্ন ধরনের সুন্দর সুন্দর নকশা করে। যা বিভিন্ন জমিদার বাড়ি পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়।
জমিদার প্রথা বিলুপ্ত হলেও যুগের পর যুগ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে প্রাচীন সভ্যতার এই অনন্য নিদর্শন মুরাদনগর উপজেলার জমিদার বাড়ি গুলো।
তন্মধ্যে অন্যতম কামাল্লার ঐতিহ্যবাহী জমিদার বাড়ি গুলো। প্রায় ৪০০ বছরের ইতিহাস জড়িয়ে আছে এই বাড়ী গুলোতে।
বর্তমানে বাড়ি গুলোতে বসবাস করেন তাদের বংশধরেরা। বাড়ি গুলো গাছ-পালায় আচ্ছাদিত এবং পাখির কল-কাকলিতে মুখরিত। কামাল্লার এই জমিদার বাড়ি দেখতে দূরদূরান্ত হতে ঘুরতে আসেন অসংখ্য মানুষ। ঘুরে আসুন কামাল্লার জমিদার বাড়িতে, ভালো লাগবে।